
মহিউদ্দিন মাহী, কক্সবাজার ভিশন ::
পর্যটন নগরী কক্সবাজার সদর উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদানের পর থেকে একের পর এক প্রসংশনীয় কাজ করে চলেছেন মোঃ নোমান হোসেন প্রিন্স। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও এক বিশেষ সম্প্রদায়ের যুবকের (হিজড়া) পড়ালেখার ভার বহনের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কক্সবাজার সরকারী কলেজে বিএসএস (সম্মান), রাষ্ট্রবিজ্ঞানে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া মোঃ সাদ্দাম হোসেইন (এ্যানি)’র পাঠ্যপুস্তক কিনতে আর্থিক অসচ্ছলতার কথা জানালে লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন ইউএনও।
সংসারে অভাব ও দারিদ্রতায় হার না মানা মোঃ সাদ্দাম হোসেইন (এ্যানি) নামে ওই হিজড়া পড়ালেখার চালিয়ে নেয়ার একটি আবেদন নিয়ে গেলে তাকে উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে শিক্ষা বৃত্তি পেতে ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর লেখাপড়ার খরচ হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া সম্মানী থেকে পাঠ্যপুস্তক ক্রয়ের জন্য নগদ চার হাজার টাকা দিয়েছেন ইউএনও মোঃ নোমান হোসেন প্রিন্স।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ইউএনও। ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘নিজেকে নায়ক বা মহান প্রমাণ করার জন্য বিষয়টি শেয়ার করি নাই। ইহা একান্তই জনসচেতনতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বৃদ্ধির জন্য সামান্য প্রচেষ্টা মাত্র। অাপনার সামান্য সহযোগিতা পেলে অামাদের পাশের এই মানুষগুলো দেশকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। জয় হোক মানবতার।’
ইউএনওর এই ধরণের মহৎ কাজকে প্রশংসার দাবী রাখে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
ওই স্ট্যাটাসে সাইফুল ইসলাম চৌধুরী নামে এক যুবক লিখেন, ‘কইজনে বুঝে এই সামাজিক দায়বদ্ধতা। এটা দেখে শুভবুদ্ধির উদয় হোক’।
লক্ষীপুর থেকে কামাল উদ্দিন হাওলাদার নামে লিখেছেন, ‘এধরনের সচেতনতামূলক পোষ্ট দেয়াও একটি ভালো কাজ, এতে অন্যরা উৎসাহ পায়।’
কয়েকমাস আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি অনাথ ছেলে লক্ষ্মীপুর সদরের ইউএনও মোহাম্মদ নুরুজ্জামানের নিকট এসে জানিয়েছিল সে টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছে না। তিনি ছেলেটির কাগজপত্র দেখেন। ছেলেটি খুব মেধাবী, সে গোল্ডেন প্লাস পেয়ে নটরডেম কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। এখন ভর্তির অপেক্ষা,পরদিন লাষ্ট ডেইট। এসব দেখে তিনি নিজে ৫ হাজার এবং উপস্থিত কয়েকজনের নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে মোট ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। তিনি ছেলেটিকে বলেন, আগামিকাল সকালে ঢাকা গিয়ে ভর্তির সুযোগ নাও পেতে পার, এক্ষুণি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হও। ছেলেটি উপজেলার সামনে থেকেই বাসে উঠে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। বর্তমানে ছেলেটি নটরডমে পড়ছে। এগুলো প্রশাসনের ভালো কাজ বলে আমি মনে করি’।
এই ধরণের আরো অসংখ্য ফেসবুক ব্যবহারকারী ইউএনওকে প্রশংসার কথা জানিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন।
পাঠকের মতামত